আমরা

অবতরণিকা:

আমরা কি হেরা হতে উৎসারিত আল্লাহময় জ্ঞানপ্রাপ্ত সর্বজনীন ধর্ম মোহাম্মদী ইসলাম এর সত্য ও সুমহান শিক্ষার সাথে পরিচিত? এ সম্পর্কে সঠিকভাবে অবগত? প্রশ্ন জাগে ‘হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর সত্য বার্তা ও শিক্ষা’ বলতে কী বুঝায়? বর্তমান যুগে সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর স্বর্গীয় প্রেমের সেই সত্য শিক্ষা জগতবাসীর সম্মুখে প্রচার করছেন মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্ব প্রদানকারী মহামানব ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর।

মোহাম্মদী ইসলাম:

মোহাম্মদী ইসলাম প্রচলিত কোনো একটি ধর্মের সাধারণ নাম নয়। মোহাম্মদী ইসলাম সর্বজনীন এক সংবিধানের নাম। যে সংবিধান যুগের পর যুগ সংরক্ষিত হয়ে আসছে মোহাম্মদী নুর ধারনকারীর সিনা মোবারকে। এই বিধান ঐশ্বরিক পরিপূর্ণ প্রেমে একই আলোক ধারনকারী মহামানব দ্বারা জাতি, ধর্ম, বর্ণ, স্থান, কাল, সংস্কৃতি ও ভাষার ভিন্নতায় প্রচারিত হয়েছে। হযরত মোহাম্মদ (সা.) সমগ্র সৃষ্টির শান্তি ও মুক্তির লক্ষ্যে এবং জাগতিক সকল প্রকার দুঃখ, কষ্ট ও যন্ত্রণা লাঘবে, আল্লাহময় সত্তার সাথে স্বর্গীয় মিলনের তরে ঐশ্বরিক চরিত্র জগতের বুকে প্রস্ফুটিত করেছেন এবং শিক্ষা ও আদর্শ জগতে প্রচার করেছেন।
সৃষ্টি নিদারুণ ভালোবেসে স্রষ্টার সন্তুষ্টি অর্জন করত স্রষ্টার নিকটবর্তী হওয়া; হযরত মোহাম্মদ (সা.) যেমন স্রষ্টাকে নিজের ভিতরে খুঁজে নিয়েছেন, স্রষ্টার রঙ্গে রঙ্গিন হয়েছেন, স্রষ্টাতে পরিপূর্ণ নিবেদিত হয়ে জগতের বুকে স্রষ্টার ইচ্ছায় পরিচালিত হয়েছেন, ঠিক তেমনিভাবে স্রষ্টাতে পরিচালিত হবার যে মাধ্যম এবং পদ্ধতি মূলত সেটাই মোহাম্মদি ইসলাম।

মোহাম্মদী ইসলামের বিশ্বাস:

মোহাম্মদী ইসলাম সর্বশক্তিমান আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস করে। সৃষ্টি তাঁর সর্বময় ক্ষমা,দয়া,করুণা এবং তাঁর কাছে নতজানু হওয়াতে বিশ্বাস রাখে। মোহাম্মদী ইসলাম স্রষ্টা কর্তৃক প্রেরিত সকল ঐশী মহামানব এবং ঐশী গ্রন্থের উপর বিশ্বাস রাখে এবং সম্মান প্রদর্শন করে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ একটি মানব সমাজের জন্য মোহাম্মদী ইসলাম আহ্বান করে।

মোহাম্মদী ইসলামের চর্চা ও অনুশীলন :

মোহাম্মদ (সা.) ! মনের ভিতর সুপ্ত এক প্রজ্বলিত ঐশী প্রেমের নাম। এই আধ্যাত্ম প্রেম বাস্তব জীবনে আলোকিত ও প্রকাশিত করতে প্রতিনিয়ত ক্বালবে স্রষ্টার উপলব্ধি অনুধাবন করার চর্চা করা অত্যাবশ্যক। এই প্রেম হচ্ছে ঐশ্বরিক এক গভীরতম অনুভূতি ও ঘোর। এই ঘোর স্রষ্টার সাথে অন্তরে অন্তরে এক সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। নিবিড় ধ্যান, ইবাদতে একাগ্রচিত্ততা নিজের ভিতরে স্রষ্টার উপলব্ধি ও স্মরণ, সর্বোপরি, নিজের প্রতিটা অবস্থাতে মোহাম্মদী আলো দ্বারা আলোকিত রাখা এবং অনুগত থাকা। নিজের ভিতরের অন্ধকার দূর করে অনন্ত আলোতে নিজেকে উদ্ভাসিত ও উৎসর্গ করা। Almighty are the core practices of Muhammadi Islam.

মোহাম্মদি শান্তির উদ্দেশ্য হলো, সৃষ্টির তরে নিবেদিত হওয়া। নিজেকে সঁপে দেওয়া। কল্যাণের তরে আত্মত্যাগী হওয়া। হাত,পা,চোখ, নাক,মুখ-সহ নিজের শরীরের কোনো অঙ্গ প্রতঙ্গ দ্বারা পাপ কর্ম না করা। চিন্তা চেতনা ও ভাবনায় পরিশুদ্ধতা আনয়ন করে সৃষ্টির কল্যাণে কর্ম সম্পাদন করা। মোহাম্মদী শান্তির চরিত্রের অনুশীলন হলো পাপ-পুণ্যের পার্থক্য নির্ণয় করতে শিক্ষা গ্রহণ করা। অন্যায় জুলুম থেকে বিরত থাকা অনাচার,পাপাচার, মিথ্যা,গিবত,অন্যের ক্ষতি করা থেকে বিরত থেকে মুখ ও হাত থেকে অন্য প্রাণী নিরাপদ থাকা।

মোহাম্মদী ইসলামের দর্শন :

মানব সভ্যতার ইতিহাসের সবচেয়ে প্রাচীন বিজ্ঞান হচ্ছে আল্লাহকে জানার বিজ্ঞান। আর মোহাম্মদী ইসলামের দর্শন এই বিজ্ঞানকে সবচেয়ে সফলভাবে কার্যকর বা বাস্তবায়ন করে থাকে।
মোহাম্মদি শান্তির উদ্দেশ্য হলো, সৃষ্টির তরে নিবেদিত হওয়া। নিজেকে সঁপে দেওয়া। কল্যাণের তরে আত্মত্যাগী হওয়া। হাত,পা,চোখ, নাক,মুখ-সহ নিজের শরীরের কোনো অঙ্গ প্রতঙ্গ দ্বারা পাপ কর্ম না করা। চিন্তা চেতনা ও ভাবনায় পরিশুদ্ধতা আনয়ন করে সৃষ্টির কল্যাণে কর্ম সম্পাদন করা। মোহাম্মদী শান্তির চরিত্রের অনুশীলন হলো পাপ-পুণ্যের পার্থক্য নির্ণয় করতে শিক্ষা গ্রহণ করা। অন্যায় জুলুম থেকে বিরত থাকা অনাচার,পাপাচার, মিথ্যা,গিবত,অন্যের ক্ষতি করা থেকে বিরত থেকে মুখ ও হাত থেকে অন্য প্রাণী নিরাপদ থাকা। মোহাম্মদী ইসলামের দর্শন : মানব সভ্যতার ইতিহাসের সবচেয়ে প্রাচীন বিজ্ঞান হচ্ছে আল্লাহকে জানার বিজ্ঞান। আর মোহাম্মদী ইসলামের দর্শন এই বিজ্ঞানকে সবচেয়ে সফলভাবে কার্যকর বা বাস্তবায়ন করে থাকে। মোহাম্মদী ইসলাম আদি থেকে অনাদি, শুরু থেকে অন্তবিহীন সকল সৃষ্টিরাজির জন্য এমন এক দর্শন, যে দর্শনে সাধনার মাধ্যমে স্রষ্টা পর্যন্ত পৌঁছানোর সকল পথের গন্তব্যকে বুঝায়। স্রষ্টা যখন নিজেকে প্রকাশ করার ইচ্ছা পোষন করলেন, তখন স্বীয় মূল আলোকিত সত্তা থেকে নুরে মোহাম্মদ নাম দিয়ে এক খণ্ড নুরকে পৃথক করলেন এবং এই নুর থেকে সকল কিছুই সৃজন করলেন। হযরত মোহাম্মদ (সা.) হলেন সৃষ্টির আদিতম সত্তা। যে সত্তা হতে ধাপে ধাপে কুন ফায়াকুনে সৃজিত হয়েছে দৃশ্যমান ও অদৃশ্য সকল কিছুই। মোহাম্মদী নুর সর্বশক্তিমানের পরিপূর্ণ শক্তি ও সৌন্দর্যকে বুঝায়। মোহাম্মদী আলোর মশাল নিয়ে যুগে যুগে প্রেরিত হয়েছেন সকল মহামানব। মোহাম্মদী ইসলাম একজন ব্যক্তিকে সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি আত্মসমর্পণ এবং আনুগত্যের নির্দেশনা প্রদান করে৷ এই আত্মসমর্পণ কিংবা আনুগত্যের জন্য প্রাথমিক শর্ত হচ্ছে মহান স্রষ্টাকে খুঁজে বের করা। প্রশ্ন হচ্ছে, আল্লাহ কোথায়?মোহাম্মদী দর্শণের মতে, আল্লাহ মানুষের মাঝেই বিরাজমান এবং আল্লাহকে নিজের মাঝেই খুঁজে পেতে হয়। মোহাম্মদী আলোটুকু স্রষ্টার আলো। মোহাম্মদী শান্তির বাণী হচ্ছে সকল মানুষের জন্য জাত, বর্ণ, গোত্র ও ভাষা অনুসারে সকলের শান্তির বিধান।

এই শরিয়ত, তরিকত, হাকিকত ও মারেফাত আমাদের মাঝে ধারণ করার জন্য জগদ্বিখ্যাত অলী-আল্লাহ, মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী, সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহবুব-এ- খোদা দেওয়ানবাগী (রহ) আত্মশুদ্ধি, দিল জিন্দা (সার্বক্ষণিক স্রষ্টার স্মরণে নিমগ্ন থাকা), নামাজে হুজুরি অর্জন করা এবং আশেকে রাসুল হওয়ার শিক্ষা প্রদান করেন। মোহাম্মদ অসংখ্য গুণের সমাহার সম্মিলিত চরিত্রের নাম। যে চরিত্রগুলো স্রষ্টা এই মহান সত্তার মাধ্যমে প্রকাশিত করেছেন এবং আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত এই চরিত্রগুলো সমুন্নত রাখবেন। উল্লিখিত প্রতিটি বিষয়ই মোহাম্মদী ইসলামের দর্শনের অন্তর্ভুক্ত, যা পরস্পরের সাথে সম্পর্কযুক্ত।

মোহাম্মদী আদর্শ:

মোহাম্মদী আদর্শ হচ্ছে পরম সত্যের উপর অবিচল ও অটল থাকা। সুমহান সত্য সম্পর্কে সম্যক ঐশ্বরিক জ্ঞান থাকা। আল্লাহর অস্তিত্বের উপর পরিপূর্ণ আস্থা ও পূর্ণ আত্মসমর্পনে রুজু থাকা। মিথ্যার সাথে আপস না করা, অন্ধকার থেকে নিজেকে আল্লাহর নুরের দিকে ধাবিত করা। 

অপরের হক থেকে তিল পরিমান বঞ্চিত না করা, কারো ক্ষতির বা অমঙ্গলের কারণ না হওয়া, বরং পরের জন্য ত্যাগ করা। নিজের কর্মকাণ্ড দ্বারা জিহ্বা, হাত, পা, চক্ষু কিংবা শরীরের যে কোনো অঙ্গ ব্যবহার করে কোনো পাপ কার্য না করা। কু-চিন্তা, কু-ভাবনা দ্বারা মস্তিষ্ককে কলুষিত না করা। চিন্তা ও মননের পরিশুদ্ধতার মাধ্যমে সৃষ্টির কল্যাণ ও অগ্রযাত্রায় অগ্রগামী হওয়া। ধৈর্য্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে অসীম সত্যকে নিজের ভিতর সুপ্রতিষ্ঠিত করা। সকল মানুষকে প্রভুর দিকে প্রত্যাবর্তন করতেই হবে, তাই নিজেদেরকে নিষ্কলুষ ও পবিত্র হয়েই স্রষ্টার কাছে ফিরে যেতে হবে। দয়া, মায়া, প্রেম এবং ক্ষমা হচ্ছে মোহাম্মদী আদর্শের মৌলিক ভিত্তি।

মোহাম্মাদী ইসলামের কার্যক্রম:

মোহাম্মদি শান্তির উদ্দেশ্য হলো সৃষ্টির তরে নিবেদিত হওয়া। স্রষ্টার সন্তুষ্টি অর্জনে নিজেকে সঁপে দেওয়া। কল্যাণের তরে আত্মত্যাগী হওয়া। মোমবাতির ন্যায় নিজে জ্বলে ক্ষয়ে নিঃশেষ হয়ে চারিধার আলোকিত করা।

এই মোহাম্মদী শান্তির বার্তা জগতবাসীর নিকট একের পর পৌঁছে দিয়েছেন নবি-রাসুলগণ, সুফি-অলী আল্লাহগণ। তারই ধারাবাহিকতায় ইমাম প্রফেসর কুদরত এ খোদা ( মা. আ.) হুজুর বর্তমানে মোহাম্মদী শান্তির বাণীর প্রচারক। তাঁর চরিত্র ও গুনাবলি পূর্বের সকল মোহাম্মদী আলো ধারনকারীদের ন্যায়।

ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) -এর পূর্বসূরি সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী ( রহ.) ছিলেন একজন কালজয়ী সংস্কারক ও জগদবিখ্যাত অলী-আল্লাহ যিনি ‘মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী’ হিসেবে সমধিক পরিচিত। উল্লেখ্য যে, ইতিপূর্বে মোহাম্মদী ইসলামকে ৪ (চার) বার পুনর্জীবনদান করেছেন ৪ জন জগদবিখ্যাত মোজাদ্দেদ। 

কালের পরিক্রমায় ও সময়ের প্রয়োজনে মোহাম্মদী ইসলামের কার্যক্রম বিস্তারের লক্ষ্যে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী (রহ.) বাংলাদেশে এবং বহির্বিশ্বে দুই শতাধিক খানকাহ এবং পাঁচ শতাধিক জাকের মজলিস প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্ব প্রদানকারী ইমাম ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বিশ্বময় মোহাম্মদী ইসলাম প্রচার ও প্রসারের কার্যক্রমকে বেগবান করছেন। চারিত্রিক ও মানসিক সমৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

বাংলাদেশ সহ বিশ্বব্যাপী ১৩২টি দেশের খানকাহ এবং জাকের মজলিসগুলোতে ধ্যান তথা মোরাকাবা এবং শরিয়ত, তরিকত, হাকিকত এবং মারেফাত সমৃদ্ধ মোহাম্মদী ইসলামের অপরাপর অনুশীলনগুলোর পাশাপাশি অনুসারীদেরকে তালিম (প্রশিক্ষণ) কার্যক্রম শুরু করেছেন ইমাম কুদরত এ খোদা ( মা. আ.) হুজুর। তিনি তাঁর অনুসারীদেরকে প্রথমেই নিজের ভিতরের ষড়রিপু দ্বারা আক্রান্ত বা প্রভাবিত জীবাত্মাকে আত্মিক পরিশুদ্ধিতা, নৈতিকতা ও নিজের অভ্যন্তরীণ দোষ ত্রুটি সংশোধন করে মোহাম্মদী স্বর্গীয় শান্তির চরিত্র ধারণের শিক্ষা দিচ্ছেন। কীভাবে আল্লাহ এবং তাঁর রাসুল (সা.)- এর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়, সেই পদ্ধতিসমূহ সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্মভাবে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। মোহাম্মদী আদর্শের বাস্তবায়নে ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) অগ্রাধিকারভিত্তিক শিক্ষার মাঝে, সততা, ত্যাগ, দাতব্য, দরিদ্রের প্রতি সহযোগিতা, আর্ত পীড়িত, নিপীড়িত এবং দূর্যোগ কবলিতদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়া, বঞ্চিতের পাশে দাঁড়ানো, প্রকৃতির লালন ও সংরক্ষণ ইত্যাদি।

en_USEnglish